রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে জি৭, লক্ষ্য জ্বালানি ও বাণিজ্য

রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন সময় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ধনী দেশগুলোর জোট জি৭, তবে দেশটি নানাভাবে তা পাশ কাটিয়ে গেছে। এবার তাই জি৭ রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায়। চলতি সপ্তাহে জাপানে অনুষ্ঠেয় জি৭–এর বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ১৯ থেকে ২১ মে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে মূলত নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর বিষয়টি আমলে নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব তৃতীয় দেশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তাদের প্রসঙ্গও সেখানে থাকবে। রাশিয়ার যুদ্ধের সক্ষমতা বিনষ্ট করতে দেশটির জ্বালানি উৎপাদন ও বাণিজ্য হ্রাস করতে ব্যবস্থা নেবে জি৭।

এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করছে, জি৭ ভুক্ত সদস্যদেশগুলো নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাদের মনোভাবে সমন্বয় আনবে, অন্তত বিশেষ কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে বিষয়টি হবে, অনুমোদিত পণ্যের তালিকার মধ্যে না পড়লে সব পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।

এর আগে বাইডেন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মনোভাব বদলাতে জি৭ কে চাপ দিয়েছে। এখন যেটা হচ্ছে সেটা হলো, কালোতালিকাভুক্ত না হলে সব পণ্য রাশিয়ায় বিক্রি করা যাবে। খবর আলজাজিরার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিবর্তন আসলে মস্কোর পক্ষে নিষেধাজ্ঞার ফাঁকফোকর খুঁজে বের করা কঠিন হবে।

জি৭ ভুক্ত দেশগুলো সামগ্রিকভাবে বৃহৎ পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দিতে নারাজ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আশা, সামরিক খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের ক্ষেত্রে জি৭ ভুক্ত সদস্যদেশগুলো অন্তত এটা ধরে নেবে যে মনোনীত তালিকায় না থাকা পর্যন্ত এসব সরঞ্জাম রপ্তানি নিষিদ্ধ।

তবে ঠিক কোন কোন খাতে নতুন এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। জি৭–এর সদস্যদেশগুলো হলো—যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য।

ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ খুঁজছে, মূলত সেই তাড়া থেকেই জি৭ এর এই উদ্যোগ। এখন যেসব বিধিনিষেধ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—রাশিয়ার রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ভিসা সীমিত করা। এর বাইরে রয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেওয়া। তবে এসব পদক্ষেপে তেমন একটা কাজ হচ্ছে না। সে কারণেই নতুন করে এই তোড়জোড়।

এদিকে পশ্চিমাদের নানা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল বিক্রি অব্যাহত।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ইনস্টিটিউটের (আইইএ) তথ্যানুসারে, রাশিয়ার মাসিক তেল বিক্রির পরিমাণ ইউক্রেন যুদ্ধের আগের পর্যায়ে ফিরে গেছে।

সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, মার্চে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ও তেলজাত পণ্য বিক্রির পরিমাণ গত বছরের এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। মার্চে রাশিয়ার দৈনিক তেল ও তেলজাতীয় পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছয় লাখ ব্যারেল বেড়েছে। এতে গত মাসে তেল ও তেলজাত পণ্য বিক্রি করে রাশিয়ার আয় হয়েছে প্রায় ১২ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা এক হাজার ২৭০ কোটি ডলার।

তবে তেল বিক্রি বাবদ রাশিয়ার আয় গত বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ কমেছে। এর কারণ, ইউরোপীয়রা রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায় দেশটির তেল ক্রেতার সংখ্যা এখন অনেক সীমিত। পশ্চিমা বিধিনিষেধের কারণে ক্রেতারা অনেক দর-কষাকষির সুযোগ পাচ্ছে, ছাড় আদায় করতে পারছে। জি৭ দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারে বেঁধে দিয়েছে।

Share this post

PinIt
submit to reddit

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top