আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণায় বাধার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রচারে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ প্রার্থী এলাকায় বহিরাগতদের নিয়ে এসেছেন। তাঁদের গাড়িবহর ও বাড়িতেও হামলা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী দলীয় প্রার্থীর জন্য ‘বিষফোড়া’ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

১৬ মার্চ এই পৌরসভার ভোট গ্রহণ হবে। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক মেয়র শাফী খান ও এলেঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি রেজিনা আখতার।

দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে পৌরসভায় অনেক বেশি নির্বাচনী কার্যালয় স্থাপন করেছেন। সেসব কার্যালয়ে বহিরাগত লোকজন পাহারায় বসেছে। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মীদের প্রচারণায় নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করছেন। তাঁরা লিখিতভাবে এসব ঘটনা নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছেন না। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানান।

শাফী খান বলেন, ১ মার্চ তাঁর নিজ গ্রামে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা। ২ মার্চ তাঁর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। রেজিনা আখতার বলেন, ৪ মার্চ তাঁর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া তাঁর কর্মীদের নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে প্রচারণা থেকে সরে যাওয়ার জন্য।

স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নূর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, তাঁর কর্মীরা কাউকে প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন না। সবাই নির্বিঘ্নে প্রচারণা করতে পারছেন। নির্বাচনে তাঁর (নূর এ আলম) অবস্থা ভালো দেখে অহেতুক অভিযোগ আনা হচ্ছে। কারও বাড়িঘর বা গাড়িবহরে তাঁর কর্মীরা হামলা চালায়নি।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালিহাতী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁর নির্বাচনী কার্যালয় সরাতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এলেঙ্গায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো পৌরসভায় চলছে নির্বাচনী আমেজ। বিভিন্ন রাস্তার মোড়, বাজারে চলছে নির্বাচনী আড্ডা। এলেঙ্গা বাজার মোড়ে চায়ের দোকানে কথা হয় সুলতান হোসেন নামের এক ভোটারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী নূর এ আলমের বিষফোড়া এখন বিদ্রোহী প্রার্থী রেজিনা আখতার। তিনি নৌকার প্রার্থীর অনেক ভোট নষ্ট করবেন।

কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, রেজিনা আখতারকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি তারপরও নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান বলেন, তিনজন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও নয়টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন ও তিন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৬ মার্চ ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। ২০১১ সালে এলেঙ্গা পৌরসভা গঠিত হয়। এই পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয় ২০১৩ সালে। বর্তমানে এ পৌরসভায় ভোটার ৩০ হাজার ৪৬৭ জন।

Share this post

PinIt
submit to reddit

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top