বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর তৃতীয় হওয়ার সান্ত্বনা পুরস্কারের জন্য নিজেদের উজ্জীবিত করা কঠিন। সেই কঠিনেরে ভালোবেসেই আজ ভাঙা হৃদয়ে দোহার খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো।
অনেকে মনে করেন, বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ অধিকাংশ দলই খেলতে চায় না। কিন্তু মরক্কোর জন্য এই ধারণা প্রয়োজন নয়। প্রতিটি ম্যাচই যে তাদের নতুন চূড়া স্পর্শ করার সুযোগ। আফ্রিকা ও আরব বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ফুটবল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাসের পাতা আগেই রাঙিয়েছে আটলাসের সিংহরা।
সেমিতে ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে ট্রফির লড়াই থেকে ছিটকে গেলেও প্রথম আফ্রিকান ও আরব দেশ হিসাবে বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়ার সুযোগ রয়েছে মরক্কোর সামনে। দলটির সমর্থক মোহাম্মদের কাছে সেটিও হবে বিশাল প্রাপ্তি, ‘তৃতীয় স্থান অর্জন করা হবে আমাদের কাছে বিশ্ব জয়ের সমান। কারণ, আমরা এরইমধ্যে অভাবনীয় সব কিছুই অর্জন করেছি। খেলোয়াড়রা দেশের জন্য যা করেছে, তাতে আমরা গর্বিত।’
দেশের মানুষের কাছে বীরের মর্যাদা তো পেয়েই গেছেন, আজ জিতলে বিশ্বকাপ মঞ্চে আফ্রিকার পতাকা আরেক ধাপ উঁচুতে তুলে ধরতে পারবেন হাকিমি, জিয়েশরা। স্কোয়াডের যারা এতদিন বেঞ্চ গরম করেছেন, আজ তাদের সুযোগ দিতে চান মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই, ‘মানসিক দিক থেকে এটা হবে কঠিন। যারা খেলার সুযোগ পায়নি, এবার তাদেরকে সুযোগ দেব। সবটুকু দিয়েই তৃতীয় হওয়ার চেষ্টা করব আমরা।’
গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার সামনে ইতিহাসের হাতছানি না থাকলেও তাদেরও কিছু পাওয়ার আছে। লুকা মদরিচ, ইভান পেরিসিচ ও মার্সেলো ব্রজোভিচের মতো ক্রোয়েশিয়ার সোনালি প্রজন্মের নক্ষত্রদের বিশ্বকাপ অধ্যায় শেষ হবে আজ। সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলের হার কাঁদিয়েছিল তাদের। ক্রোট সমর্থকদের চাওয়া, মদরিচদের বিশ্বকাপ ক্যারিয়ার শেষহোক জয় দিয়ে। একটি গোল পেলেই কিংবদন্তি দাভর সুকেরকে (৬) ছাড়িয়ে বিশ্বকাপে এককভাবে ক্রোয়েশিয়ার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে যাবেন পেরিসিচ। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছিল সুকেরের ক্রোয়েশিয়া।
একই গ্রুপে থাকা ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করেছিল মরক্কো। কাকতালীয়ভাবে আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচেও দেখা হচ্ছে তাদের।