গোপালপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থানরত তরুণীকে নির্যাতন!

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে প্রেমিকাকে বাড়িতে ডেকে আনার পর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রেমিকের স্বজনদের বিরুদ্ধে। ঐ তরুণী এখন গোপালপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্তদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে।

গোপালপুর থানা পুলিশ জানায়, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের এক তরুণী গাজীপুরের কোনাবাড়ীর অরিয়ন গার্মেন্টসে চাকরিরত অবস্থায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সূতি নয়াপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার পুত্র ফরিদুল ইসলাম শিমুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাবা-মায়ের মতামত নিয়ে বিয়ে করার জন্য ফরিদুল গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাকে নিয়ে বাড়ি আসে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তার বাবা-মা রাজি না হওয়ায় বিয়ে আটকে যায়। এমতাবস্থায় সে ফরিদুলের বাড়িতে অবস্থান করতে থাকে। গত ১ অক্টোবর গ্রামে একটি সালিশি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ফরিদুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বাবা-মাসহ গাঢাকা দেয়। কিন্তু মেয়েটি বিয়ে না করে কর্মস্থলে ফিরে যাবে না বলে ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ৯৯৯-এ ফোন দিলে গোপালপুর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুনকে নিয়ে ফরিদুলের বাড়িতে যান। বাড়িতে ফরিদুলের পরিবারের কেউ উপস্থিত না থাকায় মেয়েটির নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শামছুল আলমকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে আসেন। এক সপ্তাহ ধরে তরুণী ঐ বাড়িতেই অবস্থান করছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে গোপালপুর থানা পুলিশ মেয়েটির খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ঐ বাড়িতে গেলে ফরিদুলের মামা এরশাদ আলী, মামাতো ভাই মো. শাকিল, দুই খালা জল্পনা খাতুন ও আল্পনা খাতুন মিলে মেয়েটিকে বেদম মারধরের পর চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে আনেন। তার চিত্কারে এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে। পরে গ্রামবাসী এ নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা আহত মেয়েটিকে একটি ভ্যানে তুলে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ মল্লিক বলেন, ‘একজন নারীর ওপর এ ধরনের নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভিকটিমকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সক তাপস সাহা জানান, ভিকটিমের শরীরে নির্যাতনের অনেক চিহ্ন রয়েছে। থানার ওসি মোশারফ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share this post

PinIt
submit to reddit

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top