টাঙ্গাইলের সখীপুরে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গরিবের ‘মাংস সমিতি’। সমিতির মাধ্যমে ছয় থেকে আট কেজি মাংস পেয়ে ভালোভাবেই কাটবে ঈদ―এমনটাই প্রত্যাশা সমিতির সদস্যদের। সমিতির সদস্য উপজেলার হামিদপুর গ্রামের অটোচালক শাহ আলম মিয়া বলেন,’আমরা গরিব মানুষ। ঈদে পোলাপানগো জামাকাপড় দিতেই সব টেকা শেষ। কোনোমতে চিনি-সেমাই কিনছি। মাংস কেনার টাকা পাব কোথায়? কিন্তু সমিতি কইরা এইবার প্রায় ছয় কেজি গরুর মাংস পাব। সেই মাংস পোলাপানরে খাওয়াইতে পারব।’
একই গ্রামের জাহিদ সরকার, শাহজালাল ও আব্দুস সালাম জানান, মাংস সমিতির মাধ্যমে নিজেরা গরু কিনে এনে ভালো মাংস পাওয়া যায়, খরচও কম। তা ছাড়া আমরা মাসিক হারে চাঁদা তুলি। এতে সদস্যদের টাকা দিতে কষ্টও কম হয়।
জানা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় পাঁচশ র বেশি সমিতি গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের মাংসের চাহিদা পূরণ করবে। প্রতিটি মাংস সমিতির সদস্যসংখ্যা ৩০ থেকে ৬০ জন। সারা বছর একটু একটু করে সঞ্চয় করে ঈদের দুই-এক দিন আগে পশু কিনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেন সমিতির সদস্যরা। এতে ঈদে বাড়তি আনন্দ পান এবং তাদের আর্থিক চাপও কমে যায়। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম, পাড়া বা মহল্লায় ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এ ধরনের মাংস বা গরু সমিতি গঠন করা হয়। শুরুতে শুধু নিম্নবিত্ত মানুষেরা এ ধরনের সমিতি করলেও এখন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরাও মাংস সমিতি করছেন। প্রতিবছর বাড়ছে মাংস সমিতির সংখ্যা।চৌরাস্তা গ্রামের মাংস সমিতি গঠনের মূল উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন জানান, তাদের সমিতিতে সদস্যসংখ্যা ৫৩ জন। প্রত্যেকে মাসিক ২০০ টাকা করে জমা দেন। বছর ঘুরে সমিতিতে জমা হয় এক লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে গরু কিনে সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। প্রত্যেকের ভাগে পাঁচ কেজি করে মাংস পড়ে। তাদের এলাকাতেই এ ধরনের অন্তত ১০টি সমিতি রয়েছে।