সাংবাদিক, শুভানুধ্যায়ীদের শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আজ রোববার বাদ যোহর ডিআরইউ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে ফুলেল শ্রদ্ধায় তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়। প্রথমেই ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের নেতৃত্বে পীর হাবিবুর রহমানের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে কার্যনির্বাহী কমিটি। এরপর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন ও সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও জাতীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাঁর কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তার মৃত্যুতে ডিআরইউ’র পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা সমবেতদের উদ্দেশ্যে ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘পীর হাবিবুর রহমান ছিলেন অকুতোভয় সাংবাদিক; যার মৃত্যু সাংবাদিক, ডিআরইউ এবং দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন।
ডিআরইউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদনে আরো উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক তাপসী রাবেয়া আঁখি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামাল উদ্দিন সুমন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, কার্যনির্বাহী সদস্য মাহমুদুল হাসান, সোলাইমান সালমান, মো: আল-আমিন ও এসকে রেজা পারভেজ।
এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম শ্রদ্ধা নিবেদনে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও শাহেদ চৌধুরী এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার বাদ জোহর নামাজে জানাযা শেষে নিজ নিজ গ্রাম সুনামগঞ্জের মাইজবাড়ীতে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন পীর হাবিবুর রহমান।পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম, ১৯৬৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ শহরে।তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াকালে ১৯৮৪ সালে সাংবাদিকতায় পীর হাবিবের হাতেখড়ি। ১৯৮৬ সালে অনার্স ও ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৯২ সালে বাংলাবাজার পত্রিকার নির্মাণ পর্ব থেকে মূলত তাঁর পেশাদারির সূচনা।
পীর হাবিবুর রহমান ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তিনি ডিআরইউ’র ১৯৯৭-৯৮ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পীর হাবিবুর রহমান স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাইয়ের জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসার মুক্ত হন পীর হাবিবুর রহমান। কিন্তু গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন।