কুইন্স সিভিল কোর্টের বিচারক হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন অ্যাটর্নি সোমা সাঈদ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম মুসলিম নারী বিচারক। তার পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা।তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম মুসলিম নারী বিচারক। তার পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা।
উল্লেখ্য যে-বাংলাদেশি-আমেরিকান এটর্নি সোমা সাঈদ নিউইয়র্কে কুইন্স কাউন্টি ওমেন’স বার এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসাবে গত ২০২০-’২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনিই প্রথম একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
স্বর্ণ খচিত এ অর্জনে তার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে এটর্নি সোমা সাইদ আমার টাঙ্গাইলকে জানান,আমি ১২ বছর বয়সে এটর্ণী হবার জন্য স্বপ্ন দেখি এবং বাবা-মায়ের আগ্রহ উৎসাহ ও সার্বিক সহযোগীতায় অনেক অধ্যাবসায়ের বিনিময়ে তা অর্জন করতে সক্ষম হই।
তিনি আরো বলেন, আমার লক্ষ্য ছিল অনেক উপরে যাব এবং লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার সামর্থ অনুযায়ী আমি অনেক পরিশ্রম করি। আলবেনীর ল’ স্কুলে পড়াশুনা করি। ডক্টর অব ল’ শেষ করে পুনরায় আমাদের কমিউনিটিতে ফিরে আসি। সর্বদাই কমিউনিটির সেবা করে আসছি। বিগত বিশ বছর যাবৎ আমি অনেককেই ফ্রি লিগ্যাল এডভাইজ দিয়ে আসছি। আমাদের কমিউনিটিকে বিভিন্ন ভাবে সেবা ও সহযোগীতা করে আসছি। বর্তমানে আমি কুইন্স কাউন্টি ওমেনস বার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং নিউইয়র্ক ষ্টেট বার এসোসিয়েশনের রেফারাল ও ইফরমেশনের চেয়ার ওমেন। আমার এই অভিজ্ঞতা ও পরিক্ষিত নেতৃত্বকে আমাদের কমিউনিটির সেবার কাজে লাগাতে চাই।
এখন পর্যন্ত এখানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কোন বিচারপতি নেই। এমন একটি সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই এই পদে নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্টরা আমাকে নির্বাচন করার জন্য উৎসাহ ও প্রস্তাবনা পেশ করেন। পরবর্তীতে আমার লিগ্যাল এডভাইজার এবং নির্বাচনী এডভাইজারদের ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, আমি কুইন্স সিভিল কোর্ট জজ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেব।
এটর্নী সোমা সাঈদ জানান, তিনি একজন বাংলাদেশী হিসেবে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের কমিউনিটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে অনেক কাজ করে যেতে হবে। আরও সফলতা অর্জন করতে হবে। আমাদের কমিউনিটিকে একত্রিত করে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সৃষ্টিতে মূখ্য ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, প্রকৃত অর্থেই আমাদের অতীতের ব্যর্থতাকে প্রাধান্য না দিয়ে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সফলতাকে সামনে রেখে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। তাই ঐক্যবদ্ধতা বাঞ্চনীয়। এটর্ণী সোমা সাঈদ বাংলাদেশী কমিউিনিটির সকল পর্যায়ের নের্তৃবৃন্দকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়া কমিউনিটির সকলের আশা ভরসাকে সামনে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
উল্লেখ্য যে-সোমা সাঈদ কুইন্সের ফরেস্ট হিলের লিটিগেশন এন্ড ট্রানজ্যাকশনাল ল’ ফার্ম ‘সোমা সাঈদ এন্ড এসোসিয়েটস’-এর প্রিন্সিপাল এটর্নি। সোমা সাঈদ নিউইয়র্ক স্টেট বার এসোসিয়েশনের ল’ইয়ার রেফারেল এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিস সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারপারসন হিসাবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি ১৬ বছর যাবত আইন পেশার সাথে সম্পৃক্ত।পেশাগত সাফল্য ও কমিউনিটির সেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি সরকারি ও সামাজিকভাবে বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। গভর্নর ক্যুমো ২০১৭ সালে তাকে সার্টিফিকেট অব রিকগনিশন প্রদান করে সম্মানিত করেছিলেন। এছাড়াও নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট লেটিসিয়া জেমস, ন্যাশনাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ওয়েস্ট নাসাউ চ্যাপ্টার), সাউথ এশিয়ান পলিটিকাল একশন কমিটি (সাপাক) প্রভৃতি সংগঠনের পক্ষ থেকেও তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। করোনা দুর্যোগকালে বেকারত্ব, বাড়ি মালিক ও ভাড়াটিয়াদের অধিকার, অভিবাসী অধিকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তা, সরকারি রিলিফ ইত্যাদি বিষয়ে তার কর্মতৎপরতা প্রশংসিত হয়েছে।