প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে জরুরি চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ্বনেতাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই গ্রহকে বাঁচানোর জন্য বিশ্বের সব মানুষের রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে হবে। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলে এটি করতে পারি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ২৬ ভেন্যুর বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে প্রধানমন্ত্রীর সোমবারের (১ নভেম্বর) কর্মসূচি বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ কথা জানান।২৬ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস এবং জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অবিলম্বে সব সদস্য দেশকে তাদের কার্বন নির্গমন ১.৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখতে এবং তাদের আগ্রাসী এনডিসি (জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান) জমা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। উন্নত দেশগুলোকে জরুরিভিত্তিতে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো নবায়নযোগ্য শক্তি বাড়াতে চায়, যার জন্য আমরা প্রযুক্তি ও অর্থ চাই এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তা পৌঁছে দিতে প্রধান নির্গমনকারীদের এগিয়ে আসা উচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মুজিব সমৃদ্ধি পরিকল্পনা এবং আগে থেকেই এনডিএসি তৈরি করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এর আগে ‘জলবায়ু সমৃদ্ধি অংশীদারত্ব নিয়ে সিভিএফ-কমনওয়েলথ উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা’ এবং ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি ইন ক্রিটিক্যাল ডিকেডস’ বিষয়ে বক্তব্য দেন। সিভিএফ-কমনওয়েল্থ উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা প্রস্তাব করেন জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম (সিভিএফ) এবং কমনওয়েলথ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করতে পারে, কারণ তাদের বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে যা সিভিএফে ১.৬ বিলিয়ন এবং কমনওয়েলথে ২.৪ বিলিয়ন।সিভিএফ এবং ভি২০ (ভালনারেবল২০) এর চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে সৃষ্ট লোকসান ও ক্ষতি কমাতে বিশ্বনেতাদের এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই অনুষ্ঠানে ৫৪টি দেশের তরুণ ব্যবসায়ীদের আগামী সম্মেলন থেকে ‘কমনওয়েলথ-বঙ্গবন্ধু বিজনেস এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড’ চালু করার প্রস্তাব ঘোষণা করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পরিচালিত ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি ইন ক্রিটিক্যাল ডিকেডস’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি রোডম্যাপ দাবি করেন যাতে উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বার্ষিক কত অর্থ দেবে এবং প্রধান নির্গমনকারীরা বছরে নির্গমন কত হ্রাস করবে তা জানাবে।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরও বর্ণনা করেছেন, বাংলাদেশ অন্যদের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সফলভাবে কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করার কথাও এখানে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে কোভিড-১৯ এর সময়ে মোবাইল ফোন এবং টেলিফোনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছে কোটি কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে।