গোড়াই-সখীপুর ২৭ কি. মি. রাস্তা এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তার বাঁকে বাঁকে ঝুঁকি ও সাধারণ লোকজনের চলাচলের জন্য ফুটপাত না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। গত পাঁচ বছরে এই সড়কে প্রায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন ।
গোড়াই-সখীপুর-ঢাকা রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে। স্বাধীনতার পর থেকেই মূলত পাহাড়ি এলাকা ঘিরে ২৭ কি. মি. রাস্তাটি অত্যন্ত সরু ও অপ্রশস্ত ভাবে নির্মাণ করা হয়। রাস্তার দুই পাশে পাহাড়, বন জঙ্গল ও আকা বাঁকা। ফুটপাত নির্মাণ না হওয়ায় দুই পাশ থেকে যানবাহন চলাচলের সময় সাধারণ লোকজন বিপাকে পরতে হয়।
স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, গোড়াই-সখীপুর-ঢাকা রোড গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে সখীপুর, বাসাইল, ঘাটাইল, মধুপুর, কালিয়াকৈর, ভালুকা, ত্রিশাল, জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ গাজীপুর ও ঢাকা জেলা শতশত যানবাহন চলাচল করে আসছে। রাস্তার আশপাশে বংশাই স্কুল এন্ড কলেজ, বাঁশতৈল খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজ, বাঁশতৈল মো. মনশুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী ময়ছের আলী দাখিল মাদ্রাসা, উত্তর পেকুয়া জাগরণী উচ্চ বিদ্যালয়, তক্তারচাল সবুজ বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়সহ সখীপুর উপজেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাট বাজার রয়েছে। প্রতি দিন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে। রাস্তার দুই পাশে ফুটপাত নির্মাণ না হওয়ায় গত পাঁচ বছরে শতাধিক নারী পুরুষ ও শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে সহস্রাধিক।বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতিকুর রহমান মিল্টন ও আজগানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম সিকদার আমার টাঙ্গাইলকে বলেন,রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় গত বছর ঘাগড়াই কুড়াতলী গ্রামের একই পরিবারের চারজনসহ সাত জন নিহত হয়েছেন। এভাবে প্রতিনিয়তই যোগ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গোড়াই থেকে সখীপুর ও গারোবাজার পর্যন্ত রাস্তায় গত পাঁচ বছরে শতাধিক নিহত এবং সহস্রাধিক আহত হয়েছে। রাস্তাটি প্রশস্তসহ দুই পাশে ফুটপাত নির্মাণের জন্য তারা জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মির্জাপুর অফিসের উপবিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মো. আমিনুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, গোড়াই-সখীপুর-ঢাকা রোড মূলত পাহাড়ি এলাকা এবং আকা বাঁকা। রাস্তা প্রশস্তকরন ও দুই পাশে ফুটপাত ও ড্রেন নির্মানসহ উন্নয়নের জন্য প্রকল্প তৈরী অর্থ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে দ্রুতই এই রোডের উন্নয়ন করা হবে। রাস্তার দুই পাশে গাছ পরিষ্কার করবে বন বিভাগ।
এ ব্যাপারে বাঁশতৈল রেঞ্জ অফিসের রেঞ্জ অফিসার আশরাফুল ইসলাম আমার টাঙ্গাইল কে বলেন, রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তার দুই পাশে গাছ রয়েছে। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা মাঝে মধ্যে রাস্তার দুই পাশের বন জঙ্গল পরিষ্কার করে আসছি।
বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেন আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, গোড়াই-সখীপুর-ঢাকা রোড গুরুত্বপূর্ণ। এর দুই পাশে ফুটপাত না থাকায় সাধারণ লোকজনের চলাচল সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা শিকার হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।