টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল সকাল নয়টা থেকে আজ সকাল নয়টার মধ্যে নদীর পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১১ সেন্টিমিটার। পানি বেড়েছে যমুনার শাখা নদীগুলোতেও।
চরাঞ্চল এবং নিচু এলাকায় ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় মানুষ আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ কাছাকাছি রাস্তা এবং বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। নদী তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার আমন ধান, সবজি খেত ও বীজতলাসহ ফসলী জমি। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে ভাঙন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম যমুনায় পানি বৃদ্ধির তথ্য জানিয়ে আমার টাঙ্গাইল কে বলেন, যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় এর শাখা ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে চলে গেছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামীকাল পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এতে নদী তীরবর্তী টাঙ্গাইলের সদর, ভুঞাপুর, নাগরপুর, কালিহাতী, বাসাইল, দেলদুয়ার, মির্জাপুর উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে ধলেশ্বরী, পৌলী ও বংশাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাধ উপচে একের পর এক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত যাচ্ছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে হাজারো মানুষ। গবাদি পশু নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন তারা। দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের অভাব। এছাড়াও ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী বন্যাকবলিত এলাকায় পানির নীচে চলে যাচ্ছে শতশত একর আমন, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে গৃহহীন হচ্ছে লোকজন। নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। হুমকিতে রয়েছে মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। বন্যা ও ভাঙনে মানবেতর জীবন যাপন করছে নদী পাড়ের মানুষ।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, যমুনার পানি স্থিতিশীল থাকলেও অভ্যন্তরিণ সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর যে সব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সে সব এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরও জানান, যমুনায় পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সদর উপজেলার চর পৌলীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরোধ কার্যক্রম শুরুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। পানির তোড়ে বাসাইলের বিলপাড়া এলাকায় একটি রাস্তা ভেঙে উপজেলা সদরের সঙ্গে নাটিয়াপাড়া এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাসাইল উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলম আমার টাঙ্গাইল কে বলেন, গত বছর বন্যায় ওই এলাকায় একটি সেতু ভেঙে পড়েছিল। সড়ক যোগাযোগ চালু রাখতে সেখানে একটি ডাইভারশন রোড তৈরি করা হয়েছিল। গতরাতে পানির তোড়ে তা ভেঙে গেছে। সেখানে একটি সেতু তৈরির প্রস্তাব দেওয়া আছে। বর্ষা মৌসুম শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।