সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় যত্রতত্র গড়ে ওঠেছে অবৈধ করাতকল। বিভিন্ন সংরক্ষিত বন থেকে চোরাকারবারিরা কেটে আনছে গাছ। আর সেই গাছ দেদারছে চিরাইয়ের কাজ চলছে ওইসব অবৈধ করাতকলে। বন উজাড় হওয়ার পেছনে এটাকে অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বনবিভাগ থেকে করাতকল স্থাপনের জন্য লাইসেন্স নেয়ার কথা থাকলেও তা মানছেন না স্থানীয় প্রভাবশালী চোরাকারবারীরা।টাঙ্গাইল বনবিভাগ সূত্র জানায়, সদর উপজেলা, ভুয়াপুর, গোপালপুর, ধনবাড়ী, মধুপুর, ষাটাইল, সখীপুর, বাশাইল, মির্জাপুর, নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলায় ৬৪৪টি করাতকল রয়েছে। যার মধ্যে ৫২৩টি অবৈধ্যভাবে চলছে। করাতকল বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী, সংরক্ষিত বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো করাতকল স্থাপন করা যাবে না। আর বিশাল এই ভূমিতে রয়েছে শাল, সেগুন ও মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামাজিক বনায়নের গাছ।সরেজমিনে দেখা যায়, সখীপুর উপজেলায় মুছির পুকুর পাড়, নয়েছ বাজার, বাশতৈল বাজার, হলিদা চালা, নলুয়া ও ঘাটাইল উপজেলায় ধলাপাড়া, লক্ষিন্দর, সাগরদিঘী, জোরদিঘী, দেওপাড়া, গারোবাজার, মাকড়াই, ছনখোলা, বটতলা, কুশারিয়া, পেচাঁরআটা, নলমা, মাইধারচালাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সামাজিক বন ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে শত শত অবৈধ করাতকল। এসব করাতকলে দিন-রাত চেরানো হচ্ছে শাল, গজারিসহ বিভিন্ন গাছ। এর ফলে দিন দিন উজাড় হচ্ছে বন, ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ।
সখীপুর উপজেলায় করাতকল মালিক গোলজার, দুলাল, সাত্তারসহ কয়েকজন জানান, তারা লাইসেন্স নিয়ে করাতকল চালাতে চান, কিন্তু লাইসেন্স পাচ্ছেন না।
সখীপুর উপজেলার স্থানীয় মিজানুর রহমান আমার টাঙ্গাইলকে জানান, বনের ভেতর স্থাপিত এসব করাতকলের মালিক কাঠ ব্যবসায়ীরা। অবৈধ করাতকলের মালিকদের সঙ্গে স্থানীয় বিট কর্মকতাদের সাথে দহরম-মহরম সম্পর্ক থাকায় তারা করাতকল চালাতে পারে। অবৈধ করাতকলের কারণে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অপরদিকে নির্বিচারে বনের গাছ কেটে উজাড় হচ্ছে বনভূমি। তিনি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের জন্য দ্রুত অভিযানের দাবি জানান।
টাঙ্গাইল বনবিভাগের প্রধান সহকারী মো. আ. কাদের আমার টাঙ্গাইল কে বলেন, আমরা করাতকল মালিকদের লাইসেন্স দিতে উৎসাহিত করে থাকি। যারা বলে লাইসেন্স দিচ্ছে না, তারা লাইসেন্সের জন্য আবেদনই করেনি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, আমরা সকল অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের বিষয়ে বিভিন্ন উপজেলার রেজ্ঞ অফিসারদের নিয়ে মিটিং করেছি। আমাদের উচ্ছেদ অভিযান নিয়মিত হচ্ছে এবং এটা অব্যাহত আছে।