রশিদ আহাম্মদ আব্বাসী নামের এক সাংবাদিককে অপহরণ ও হত্যা করে লাশ গুমের হুমকির অভিযোগে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে মামলার বাদী সাংবাদিক রশিদ আহাম্মদ আব্বাসী নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সাংবাদিক কালিহাতী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি। টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করা হয়। বিচারক নুশরাত জাহান মামলাটি তদন্তের জন্য কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ তোতা (৬৫), দুলাল হোসেন (৫০), ফজলুল হক (২৪), আব্দুল কাদের (৫৫), প্লাবন (২৫) ও শাহ জালাল ওরফে জালাল (৪০)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ জুলাই দুপুরে এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী সাংবাদিক রশিদ আব্বাসীকে ফোন করে বাসায় (এমপির বাসা) যেতে বলেন। বাসায় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এমপি তার সহযোগীদের রশিদ আব্বাসীকে খুন করে লাশ গুমের হুকুম দেন। এ সময় আসামিরা তাকে এমপির বাসা থেকে তুলে নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ওই সাংবাদিককে রেখে তারা চলে যান। যেতে যেতে তারা সাংবাদিক রশিদ আব্বাসীকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর তাৎক্ষণিক ওই সাংবাদিকও সেখান থেকে চলে যান।
এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা (সিআর- মামলা নম্বর- ৩৫৩/২০২১) দায়ের করেন।
সাংবাদিক রশিদ আহাম্মদ আব্বাসী বলেন, ‘এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী ফোন করে আমাকে ডেকে নেন। পরে তার বাসায় গেলে সাঙ্গপাঙ্গদের হুকুম দেন, আমাকে হত্যা করে লাশ গুমের। এক পর্যায়ে আমাকে বাসা থেকে বের করে রাস্তা দিয়ে নেওয়ার সময় চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসতে আমাকে রেখে চলে যায় তারা। এ ঘটনায় আমি ওইদিন কালিহাতী থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ আমার অভিযোগটি আমলে নেয়নি। পরদিন ২৬ জুলাই আমি পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত আবেদন করি। এরপর ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, আইজিপি পুলিশ সদরদফতর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন দিই। আবেদনগুলোর বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হয়ে যায়। এরপর বাধ্য হয়েই আমি আদালতের শরণাপন্ন হই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সাংবাদিক। বিভিন্ন সময় অনেকের বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশ হয়। হয় তো কোনও নিউজের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে।’
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনও আদালত থেকে কোনও আদেশ পাইনি।’