নারী নির্যাতনের মামলায় ৫০ ঘণ্টায় অভিযোগপত্র

টাঙ্গাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার ৫০ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। রোববার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই অভিযোগপত্র জমা দেন।

সখীপুর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই নির্যাতনের শিকার রামু রানীকে (৩৫) উদ্ধার করে। শুক্রবার ভোরে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নিজেদের গাড়িতে করে এনে ওই নারীকে সখীপুর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। ভোরে রামু রানীর স্বামী স্বপন কোচকে (৪০) নির্যাতনের দায়ে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়।
শুক্রবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে রামু রানীর ভাই জগদীশ চন্দ্র কোচ বাদী হয়ে স্বপন কোচকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সখীপুর থানায় মামলা করেন। রেকর্ড হওয়ার ৫০ ঘণ্টার মধ্যে মামলার সব কার্যক্রম শেষ করে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আসামি স্বপন কোচ বর্তমানে কারাগারে আছেন। স্বপন কোচ উপজেলার বড়চালা গ্রামের বাসিন্দা।

সখীপুর থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বিকেলে আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, শুক্রবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। তারপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষ্য গ্রহণ, ২২ ধারায় আদালতে নির্যাতিতের জবানবন্দি রেকর্ড, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা সনদ গ্রহণ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ মামলার সব কার্যক্রম শেষে ৫০ ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টায় টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।মামলার বাদী জগদীশ চন্দ্র আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, ‘বিয়ে হওয়ার পর থেকে নানা সময়ে নানা বাহানা করে আমার বোনকে মারধর করা হচ্ছিল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে আমার বোনজামাই যৌতুক দাবি করে আমার বোনকে বেদম মারপিট করছিল। মারপিটের কারণে আমার বোনের ছোট ছোট চার সন্তানের কান্নাকাটি ও বোনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘুম থেকে জেগে ওঠে। ঘরে আটকে মারধর করায় প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকতে না পেরে তাঁরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন। পরে রাত দুইটায় পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে আমার বোনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর তাকে সখীপুর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। অল্প সময়ে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে সাইদুল হক আমার টাঙ্গাইলকে বলেন,৫০ ঘণ্টায় মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। পুলিশ ইচ্ছা করলে পারে, এ ঘটনা তারই প্রমাণ। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারসহ পুলিশ সদর দপ্তরেও অবগত করা হয়েছে।সহকারী পুলিশ সুপার (সখীপুর সার্কেল) আবদুল মতিন আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, সখীপুর থানা থেকে এর আগে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম সময়ে মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেটাও ছিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের করা মামলায়। অল্প সময়ে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে তিনিও ধন্যবাদ জানান।

Share this post

PinIt
submit to reddit

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top