করোনার মধ্যে সারাদেশে শিশুদের জন্য নতুন আতঙ্ক ডেঙ্গু জ্বর!

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। গত ছয় মাসে ১৬ শিশুর ডেঙ্গু শনাক্ত হলেও গত আটদিনে ২১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে। এডিস মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আগামী দুই মাসে এটি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

বুধবার (১৪ জুলাই) ঢাকা শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষার্থী। কেউ বাসায় থেকে, কেউ আবার বাইরে খেলতে গিয়ে এডিস মশার কবলে পড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে।ঢাকা শিশু হাসপাতালের তৃতীয় তলায় টাঙ্গাইল থেকে এসে ভর্তি হয়েছেন ৯ বছরের শিশু অঙ্কন। ১৫ নম্বর বেডে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। সঙ্গে তার মা শান্ত চন্দ্রা রয়েছেন। তিনি আমার টাঙ্গাইলকে বলেন, ‘গত নয়দিন আগে আমার ছেলের জ্বর আসে। তিনদিন পর তা ১০৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় উঠে যায়। পরে চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি কিছু পরীক্ষা দেন। রিপোর্টে ডেঙ্গু ধরা পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করি।’এদিকে হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পাঁচ শিশুর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। জুনে সেটি ১১ তে পৌঁছলেও গত আটদিনে ২১ জন শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে তাদের অনেকে হাসপাতালে ভর্তি। অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে। তার মধ্যে তিনজন শিশু আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে।

হাসপাতালের নিয়মিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ৭ জুলাই দুজন, ৮ জুলাই দুজন, ৯ জুলাই চারজন, ১০ জুলাই চারজন, ১১ জুলাই দুজন, ১২ জুলাই চারজন ও ১৩ জুলাই তিনজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক ডা. রিপওয়ানুল আহসান আমার টাঙ্গাইল কে বলেন, ‘করোনার পাশাপাশি বর্তমানে শিশুরা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৬ থেকে ১৫ বছরের শিশুর সংখ্যা বেশি। নানাভাবে তারা আক্রান্ত হচ্ছে। চলতি মাসে এ সংখ্যা তুলনামূলক বেড়ে গেছে। আগামী দুই মাস এর প্রকোপ বেশি থাকবে।’

ডেঙ্গ হলে কী ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম তিনদিন শরীরে জ্বর আসতে পারে। এটি ১০৪ ডিগ্রি বা তার বেশি তাপমাত্রা হতে পারে। সঙ্গে বমি, মাথাব্যথা, স্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা অনুভব করতে পারে। চতুর্থদিন জ্বর চলে যাওয়ার পর প্রস্রাব কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া, মাথাব্যথা, বমি করা, অস্বাভাবিক শরীর চুলকানো শুরু হতে পারে। এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কোনো ধরনের উপসর্গ না থাকলে তার প্রয়োজন হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিশুদের ডেঙ্গুর কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।’

এ অবস্থায় কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

Share this post

PinIt
submit to reddit

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top