নিয়ন্ত্রণে আসেনি সেজান জুস ফ্যাক্টরির আগুন, নিহত বেড়ে ৫৩!

সেজান জুস কারখানার আগুনে পুড়ে মৃত্যু এ পর্যন্ত ৫৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে ৪৫ জন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে প্রায় অর্ধশত। কারখানার আগুন শুক্রবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্মন ও কারাখানা সংশ্লিষ্টরা।কারখানার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, সাত হাজার শ্রমিক এই কারখানায় কাজ করতেন। করোনার কারণে কারখানার কয়েকটি ইউনিট বন্ধ থাকায় সব শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার আগুন লাগার সময় কর্মস্থলে ছিল না।কারাখানা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, করোনায় দেশব্যাপী চলমান লকাডাউনের কারণে কারখানাটি আংশিক চলমান ছিল। এ কারণে বৃহস্পতিবার কর্মরত ছিল তিন হাজার শ্রমিক। তাদের অধিকাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তারা সবাই নিম্ন আয়ের পরিবারের।

স্বজনদের আহাজারি-প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, আগুন লাগার খবর শুনে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কারখানার সামনে ভীর করেছেন অনেকে। স্বজনদের খুঁজতে আসা মানুষের আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। করুণ এক দৃশ্য। কেউ ছুটছেন স্বজনের খোঁজে। শোকে কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কেউবা বাক রুদ্র। কেউবা নিরবে দাঁড়িয়ে আছেন ভবনের পাশে। আবার কেউ কেউ মুর্ছা যাওয়া স্বজনদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন।

শ্রমিকরা জানায়, কারখানার ছয় তলায় ছিল স্টোরেজ, কার্টন ও ফুড সেকশন। ওই ফ্লোরে চার শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। শতাধিক শ্রমিক দোতলায় ফুড প্যাকেজিংয়ে কাজ করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ষষ্ঠ তলায় উদ্ধার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। ওই ফ্লোরে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তাছাড়া ভবনের পঞ্চম তলায় উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবনের তৃতীয় তলার কার্টন সেকশন থেকে লাগা আগুন মুহূর্তে দোতলার টোস্ট সেকশন, তৃতীয় তলার লাচ্ছি ও লিচু সেকশন, চতুর্থ ও পঞ্চম তলার স্টোর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, এখানে কর্মরত শ্রমিকদের আয়ে চলে তাদের সংসার। শিশু-কিশোরসহ কারখানায় কর্মরতদের সামান্য আয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে জীবনযাপন করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ওই পরিবারগুলো এখন অসহায় অবস্থায় পড়েছে।

এদিকে মৃতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

Share this post

PinIt
submit to reddit

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top