ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে গোড়াই ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ চলমান। এতে প্রতিদিনই এ এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্ট হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষ।
এছাড়া গোড়াই-সখিপুর সড়কের যানবাহনগুলো মহাসড়কের গোড়াই এলাকায় ইউটার্ন নেয়া ও শিল্পাঞ্চল এলাকার শ্রমিকরা দলবেঁধে মহাসড়ক পার হওয়ায় ওই স্থানের উভয় পাশে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, মহাসড়কে অন্যান্য স্থানে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করলেও গোড়াই এলাকায় এসে যানজটে আটকা পড়তে হচ্ছে। এসময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর যানজট ছিল এ সড়কে। শুক্রবার (১১ জুন) দুপুরের পর থেকে ওই স্থানে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। এরপর শনিবারও (১২ জুন) সেখানে যানজটে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
পরদিন রোববার সকাল ১০টার পর থেকে একইস্থানে দিনভর থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়েন নারী ও শিশু যাত্রীরা।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কটি প্রথমে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটি ২০১৩ সালে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ২০১৬ সালে এর কাজ শুরু হয়।
পরবর্তীতে মহাসড়কটির ছয় লেনের কাজ শুরু হয়। মহাসড়কটিতে ১৩টি আন্ডারপাস ও সাতটি ফ্লাইওভার রয়েছে। এটি প্রথমে চার লেনে উন্নীত করার কথা থাকলেও পরে ছয় লেনের কাজের অনুমোদন দেয়া হয়।
বর্তমানে চার প্যাকেজে সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। প্রতিটি প্যাকেজের জন্য আলাদা আলাদা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় গোড়াই ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ বিলম্বে শুরু হয়।
চার লেন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ বি এম খোরশেদ আলম জানান, মহাসড়কে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্লাইওভারের উভয়পাশে দুই লেনের সার্ভিস লেন সড়ক নির্মাণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘গোড়াই এলাকার নাহিদ কটন মিলের পাশে অধিগ্রহণকৃত জমির একটি ভবন ভাঙা হচ্ছে। এ কারণে ওই স্থানে ১০০ মিটার সড়ক এক লেন রয়েছে। আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে ওই রাস্তাটুকু দুই লেনে রুপান্তর করা হবে। চলতি বছর ডিসেম্বরে ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ সমাপ্ত হবে।’
মির্জাপুর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত চলাচলকারী মোত্বাকিম পরিবহনের হেলপার এনামুল বলেন, ‘প্রতিদিনের খরচ বাদে মালিককে টাকা দেয়া হলেও যানজটে আটকা পড়ে দিনের প্রায় চার ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে বাস চালাতে না পারায় তেল ও নিজেদের খরচও আসছে না।’
রিজভী পরিবহনের সুপারভাইজার বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘রোববার দুপুর ১টায় সোহাগপাড়া এলাকায় এসে যানজটে আটকা পড়েন। ৪০ মিনিটে এক কিলোমিটার আসতে পেরেছি মাত্র।’
গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘গোড়াই আন্ডারপাসের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা ও টাঙ্গাইল থেকে আসা যানবাহনগুলো ৮০-৯০ কিলোমিটার গতিতে আসলেও গোড়াই এলাকায় এসে গতি থেমে যাচ্ছে। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে’।